অপহরণ মামলার আসামীদের রক্ষা করতে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীর বয়স বাড়িয়ে জন্মসনদ দিলেন চেয়ারম্যান

বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি

রাজশাহীর বাগমারায় অপহরণ মামলার আসামীদের রক্ষা করতে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীর পূর্বের জন্ম সনদ পাল্টিয়ে বয়স বাড়িয়ে ১৯ বছরের জন্ম সনদ দিয়েছেন ঝিকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। এতে ওই ছাত্রীর অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে একদিকে যেমন চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে এলাকাবাসীর মাঝেও দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

জানা গেছে, উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের ভানসিপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে জুঁই আক্তার (১৩) ভানসিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর একজন নিয়মিত ছাত্রী। গত ২২ ফেব্রুয়ারী সকাল ৮ টার দিকে সে বাড়ী থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় একই গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে ২ সন্তানের জনক বখাটে বাবু হোসেন মরু ও তার তিনজন সহযোগী মিলে তাকে টেনেহিঁছড়ে জোরপূর্বক সিএনজিতে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ওই দিনই ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে আজো অপহৃত ছাত্রী উদ্ধার কিংবা অপহরণকারীরা গ্রেফতার হয়নি। তাছাড়া অভিযোগটিও মামলা হিসাবে আমলে না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। এরপর গত ২১ মার্চ ভিকটিমের চাচা জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে বখাটে বাবু হোসেন মরু ও তার সহযোগী আলতাফ হোসেনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলা থেকে আসামীদের রক্ষা করতে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওই ছাত্রীর বয়স ৬ বছর বাড়িয়ে জন্ম সনদ দিয়েছেন। ভিকটিমের চাচা জহুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, পূর্বের জন্ম সনদ, স্কুলে ভর্তির সনদ ও টিকার কার্ড অনুযায়ী তার ভাতিজির (জুঁই আক্তার) আসল জন্ম তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১০ ইং। কিন্তু চেয়ারম্যান জালিয়াতী করে তার ভাতিজির পূর্বের জন্ম তারিখ পাল্টিয়ে নতুন করে ৬ বছর বাড়িয়ে দিয়ে ৬ ডিসেম্বর ২০০৪ বানিয়ে জন্ম সনদ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঝিকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই ছাত্রীর নামে পূর্বে জন্ম সনদ ছিল এটা আমার জানা ছিল না। তাই ভূলবশত ওই ছাত্রীর নামে দুইবার জন্ম সনদ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে দুই সনদে দুই রকম জন্ম তারিখ হয়েছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় আদালতের মাধ্যমে একটি মামলা পাওয়া গেছে। আসামিদের গ্রেফতার চেষ্টা চলছে।

আরো দেখুনঃ